সুদানের দারফুর অঞ্চলের এল-ফাশার শহরে ভয়াবহ গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে—এমন চিত্র উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক স্যাটেলাইট বিশ্লেষণে। আধা-সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (RSF) গত সপ্তাহে শহরটি দখল করার পর থেকেই সেখানে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত আরএসএফ গত রবিবার এল-ফাশার দখল করে নেয়। শহরটি দখলের পর থেকেই হত্যাযজ্ঞ, যৌন সহিংসতা, সাহায্যকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং ব্যাপক অপহরণের ঘটনা ঘটছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। বর্তমানে শহরটির সঙ্গে বাইরের যোগাযোগ প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটেরিয়ান রিসার্চ ল্যাব শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানায়, নতুন স্যাটেলাইট ছবিতে শহরের আশপাশে শত শত দেহাবশেষ, ধ্বংসপ্রাপ্ত স্থাপনা এবং সামরিক ঘাঁটির ভেতর সন্দেহজনক বস্তু দেখা গেছে, যা গণহত্যা চলমান থাকার ইঙ্গিত বহন করে। গবেষকদের মতে, “শহরের অধিকাংশ মানুষ হয় নিহত, বন্দী, অথবা পালিয়ে লুকিয়ে আছে।”
বেঁচে ফেরা এক নারী, হায়াত, বার্তা সংস্থা এএফপি-কে জানান, “আমরা পালানোর সময় যুবকদের আলাদা করে আটক করা হয়। এরপর তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, জানি না।”
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৫ হাজার মানুষ এল-ফাশার থেকে পালিয়ে গেছে। কিন্তু এখনো হাজার হাজার মানুষ সেখানে আটকা পড়ে আছে। আরএসএফের চূড়ান্ত আক্রমণের আগে শহরটিতে প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার মানুষ বসবাস করছিল।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দারফুরে এই হত্যাযজ্ঞ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের গুরুতর লঙ্ঘন, যা অবিলম্বে বৈশ্বিক পদক্ষেপের দাবি রাখে।
