গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে অংশ নেওয়া ত্রাণ নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-তে যুক্ত থাকার অভিযোগে ১৭১ জন আন্তর্জাতিক কর্মীকে দেশ থেকে বহিষ্কার করেছে ইসরায়েল। সোমবার (৬ অক্টোবর) ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। বহিষ্কৃতদের মধ্যে রয়েছেন সুপরিচিত সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্স (Twitter)-এ প্রকাশিত পোস্টে জানায়, “হামাস-সুমুদ ফ্লোটিলা” থেকে আটক ১৭১ জন ‘উসকানিদাতাকে’ দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে গ্রেটা থুনবার্গসহ গ্রিস, ইতালি, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র ও আরও কয়েকটি দেশের নাগরিক রয়েছেন।
প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, গ্রেটা থুনবার্গসহ আরও দুই নারী বন্দিদের ব্যবহৃত ধূসর পোশাক পরে তেল আবিবের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হাঁটছেন।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখনো ১৩৮ জন কর্মী ইসরায়েলে আটক রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে গাজায় ‘অবৈধ প্রবেশের চেষ্টা’ এবং ‘ইসরায়েলের নিরাপত্তা ব্যাহত করার’ অভিযোগ আনা হয়েছে।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা: পটভূমি
৪৫টি নৌযান নিয়ে গঠিত এই বহরটি গাজায় ত্রাণ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল। আন্তর্জাতিক জলসীমায় পৌঁছার পর গত বুধবার ইসরায়েলি নৌবাহিনী একে আটক করে। এতে থাকা প্রায় ৪০০ মানবিক সহায়তা কর্মীর গাজায় প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, দুই বছরের ভয়াবহ সংঘাত ও অবরোধের কারণে বর্তমানে গাজায় দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এই প্রেক্ষিতেই আন্তর্জাতিক কর্মীরা ত্রাণ পৌঁছাতে চেয়েছিলেন।
তবে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের বিরুদ্ধে ‘ভুয়া প্রচারণা চালানোর’ অভিযোগ এনেছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়, “তাদের সব ধরনের আইনি অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা যে সহিংসতার অভিযোগ তুলছেন, তা তাদের পূর্বপরিকল্পিত ফেক নিউজ ক্যাম্পেইন।”
এর আগে ইস্তাম্বুলে পৌঁছানো কয়েকজন আন্তর্জাতিক কর্মী অভিযোগ করেন, ইসরায়েলি বাহিনী তাদের প্রতি ‘প্রাণীর মতো আচরণ’ করেছে এবং ভয় দেখাতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনায় বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, মানবিক সহায়তা নিয়ে যাওয়া কর্মীদের এমন আচরণ আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের পরিপন্থী।
 
								 
															










