বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়র বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং সাইবার সুরক্ষা আইনে অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমানের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে মামলায় দণ্ডবিধির ২৯৫(ক) ধারা—অর্থাৎ ধর্ম অবমাননার অভিযোগে শাস্তিযোগ্য অপরাধ—সংযোজনের আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।
তদন্তে নতুন ধারা যুক্ত
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, চকবাজার থানার এসআই শাহজাহান সিরাজ, আদালতে উপস্থিত হয়ে জানান—শ্রীশান্ত রায়ের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা পোস্টগুলোতে ইসলাম ধর্ম ও মুসলিম নারীদের নিয়ে কটূক্তি, অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য রয়েছে, যা স্পষ্টভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে।
তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের ভিত্তিতে আদালত ধর্মীয় অবমাননার ধারা যুক্ত করার অনুমোদন দেন। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় জামিন আবেদনটি গৃহীত হয়নি।
বুয়েটে উত্তেজনা ও মামলার পটভূমি
এর আগে মঙ্গলবার রাতেই বুয়েট ক্যাম্পাসে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ ওঠে—শ্রীশান্ত তার সহপাঠীকে যৌন হয়রানি করেছেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ইসলাম ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চকবাজার থানা পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়।
পরদিন (বুধবার) বুয়েটের সিকিউরিটি অফিসার আফগান হোসেন চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন। আদালতে শ্রীশান্তকে হাজির করে পুলিশ তার কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে, যা আদালত মঞ্জুর করেন।
তদন্তে উন্মোচিত তথ্য
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, শ্রীশান্ত বুয়েটের আহসানউল্লাহ হলে অবস্থানকালে ‘Weekly Service 923’ নামে একটি ছদ্মনাম ব্যবহার করে ৮ জুন থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক পোস্ট দেন।
সেসব পোস্টে মুসলিম নারী ও ইসলাম ধর্ম নিয়ে একাধিক অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ ও বিদ্বেষমূলক মন্তব্য পাওয়া গেছে।
পুলিশের প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে এই ছদ্মনাম ব্যবহৃত আইডির প্রকৃত মালিক হিসেবে শ্রীশান্ত রায়কে শনাক্ত করা হয়। তার এসব কর্মকাণ্ডে বুয়েটের ধর্মপ্রাণ শিক্ষার্থী ও মুসলমানদের গভীরভাবে আঘাত ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
বর্তমানে অবস্থান
শ্রীশান্ত রায় বর্তমানে কারাগারে আছেন। মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। আইনজীবীদের মতে, ধর্মীয় অবমাননা ও সাইবার অপরাধের ধারাগুলো প্রমাণিত হলে এটি একটি অপরাধমূলক মামলা হিসেবে কঠোর শাস্তির আওতায় পড়বে।











