সেন্টমার্টিন দখল, পলিথিন ব্যবহার ও নদী দূষণ—এই তিনটি ইস্যুতে সরকারের কঠোর অবস্থানের বার্তা দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেছেন, “সেন্টমার্টিন দখলকারীদের বিরুদ্ধে আমরা স্পষ্ট ও জোরালো বার্তা দিয়েছি। পলিথিনের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে, যার ফলে এখন রাজধানীর সুপার মার্কেটগুলোতেও পলিথিন পাওয়া যায় না।”
শনিবার বিকেলে গাজীপুরের কাপাসিয়ার শীতলক্ষ্যা নদীর ধাঁধার চর এলাকায় নদী দূষণ পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, “নদী দূষণ রোধে একটি মাত্র পদ্ধতি যথেষ্ট নয়। দূষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া, কেন্দ্রীয় ইটিপির (বর্জ্য শোধনাগার) আওতায় আনা, প্রয়োজনে কিছু কারখানা বন্ধ করে দেওয়া—সব বিকল্পই এখন কাজে লাগানো হচ্ছে। চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে যতটা সম্ভব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, এবং সেই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।”
তিনি আরও জানান, ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর জন্য বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় একটি বিশেষ প্রকল্প প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। “আশা করছি, প্রকল্পটি ডিসেম্বরেই অনুমোদন পাবে। এতে পরিবেশ অধিদপ্তরের জন্য আলাদা বাজেট, জনবল এবং আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যাতে কার্যকরভাবে নজরদারি ও আইন প্রয়োগ করা যায়।”
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, “শুধু সরকার বা অধিদপ্তর নয়—শিল্পমালিকদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। আমাদের এখনো পয়োবর্জ্য ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যথাযথভাবে গড়ে ওঠেনি। তাই শিল্পদূষণ ও গৃহস্থালি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা—উভয় দিক একসঙ্গে কাজ করলেই নদী রক্ষা সম্ভব হবে।”
রিজওয়ানা হাসান পরিবেশ আন্দোলনকর্মীদের সহায়তার বিষয়েও আশাবাদী মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “পরিবেশবাদীরা আমাকে যেভাবে সহায়তা করছেন, আমি আমার অবস্থান থেকে তাঁদের পাশে থাকব। আমরা একে অপরের সহযোগী শক্তি হিসেবে কাজ করব।”
এই পরিদর্শন সফরে তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সুইডেন দূতাবাসের জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিভাগের প্রধান নায়োকা মার্টিনেস বেক্সস্ট্রম, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সোলায়মান হায়দার, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ মোবাশ্বেরুল ইসলাম, বিআইডব্লিউটিএ পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন, বাপা সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির এবং বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মনির হোসেন।











