মিরপুর টেস্টের শেষ দিনের আগে ম্যাচের চিত্র প্রায় পরিষ্কার। বাংলাদেশ আর আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার দুই টেস্ট সিরিজে স্বাগতিকদের সামনে ধবলধোলাইয়ের সুবর্ণ সুযোগ। আইরিশদের লড়াই এখন কেবল পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর লক্ষ্যেই সীমাবদ্ধ।
আয়ারল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে দিন শেষ করেছে। জয়ের জন্য এখনো প্রয়োজন ৩৩৩ রান—যা বাস্তবে অসম্ভব বললে অত্যুক্তি হবে না। শেষ দিনের খেলায় তারা ভরসা রাখতে বাধ্য কার্টিস ক্যাম্ফার ও অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের ওপর। ক্যাম্ফার ৩৪ রানে ব্যাট করছেন, ম্যাকব্রাইন অপরাজিত ১১ রানে।
বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের মূল ভরসা তাইজুল ইসলাম চতুর্থ দিন তুলে নিয়েছেন তিনটি উইকেট। এর মধ্য দিয়ে তিনি দেশের হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেটের নতুন মালিক হয়েছেন। অ্যান্ড্রু বালবির্নিকে এলবিডব্লিউ করে সাকিব আল হাসানের ২৪৬ উইকেট পেছনে ফেলেছেন। এরপর পল স্টার্লিং ও স্টেফানি দোহানিকে আউট করে দাঁড়িয়ে গেছেন আরেকটি ঐতিহাসিক অর্জনের দ্বারপ্রান্তে। মাত্র একটি উইকেট পেলেই তিনিই হবেন বাংলাদেশের প্রথম বোলার, যার টেস্ট উইকেট ২৫০।
৫০৯ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেই আয়ারল্যান্ড ব্যাকফুটে চলে যায়। তাইজুলের প্রথম আঘাতেই ফেরেন দুই ওপেনার বালবির্নি ও স্টার্লিং। এরপর হ্যারি টেক্টর ৫০ রান করে কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও হাসান মুরাদের বলেই বিদায় নেন। দিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য এসেছে খালেদ আহমেদের হাত থেকে।
এর আগে ১ উইকেটে ১৫৬ রান থেকে চতুর্থ দিনের শুরুতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ দারুণ দাপট দেখায়। ৪ উইকেটে ২৯৭ রানে ইনিংস ঘোষণা করে তারা। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ১ রানেই আউট হলেও দলটির বাকি তিন টপ-অর্ডার ব্যাটার দারুণ ব্যাটিং উপহার দিয়েছেন। মাহমুদুল হাসান জয় (৬০), সাদমান ইসলাম (৭৮) ও মমিনুল হক (৮৭) দলের রান পাহাড় গড়ে দিতে বড় ভূমিকা রাখেন। সামান্য ব্যবধানে মমিনুল সেঞ্চুরি মিস করলেও ইনিংস ছিল দায়িত্বশীল ও কার্যকর।
মুশফিকুর রহিমও খেলেছেন ৫৩ রানের অপরাজিত ইনিংস। এই স্কোরের মধ্য দিয়েই তিনি যোগ করলেন আরেকটি কীর্তি—টেস্ট ক্যারিয়ারের শততম ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ফিফটি করা বিশ্বের মাত্র দ্বিতীয় ব্যাটার তিনি। এ তালিকায় তার আগে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং।
সব মিলিয়ে মিরপুর টেস্টে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ দৃঢ়ভাবে বাংলাদেশের হাতে। এখন শুধু অপেক্ষা শেষ দিনের প্রথম সেশনেই বাকি চারটি উইকেট তুলে নেওয়ার।
