দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আবারও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে ৬৩৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিভাগভিত্তিক চিত্র
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৬৩৬ জন রোগীর মধ্যে—
- বরিশাল বিভাগে: ১৩১ জন
- চট্টগ্রাম বিভাগে: ৯২ জন
- ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে): ১৩১ জন
- ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায়: ১০৫ জন
- ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায়: ৯৭ জন
- খুলনা বিভাগে: ২৯ জন
- ময়মনসিংহ বিভাগে: ৬ জন
- রাজশাহী বিভাগে: ৩৪ জন
- রংপুর বিভাগে: ৭ জন
- সিলেট বিভাগে: ৪ জন
এদিকে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে গত এক দিনে ৫০২ জন রোগী ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছর এ পর্যন্ত মোট ৩৬ হাজার ৫২৮ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
সামগ্রিক পরিস্থিতি
স্বাস্থ্যতথ্য বলছে, বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিনই বিপুল সংখ্যক ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হচ্ছে। সরকারিভাবে জানানো হয়েছে—
- হাসপাতালে ভর্তির পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও শঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।
- বিশেষ করে ঢাকা মহানগরী, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে আক্রান্তের হার বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গুর বিস্তার ঠেকাতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, সিটি করপোরেশন ও জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো ছাড়া বিকল্প নেই।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন,
- ডেঙ্গুর মূল বাহক এডিস মশার দ্রুত প্রজনন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
- আক্রান্ত অঞ্চলভেদে আলাদা কৌশল ও বিশেষ মশকনিধন কার্যক্রম পরিচালনার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
- পাশাপাশি, সময়মতো হাসপাতালে ভর্তি ও সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত না হলে মৃত্যুহার আরও বেড়ে যেতে পারে।
ডেঙ্গুতে প্রাণহানি ও সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে থাকায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জরুরি ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ও জনগণকে যৌথভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতে সবার একযোগে কাজ করাই হবে একমাত্র সমাধান, নাহলে চলতি মৌসুমে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।











