মিরপুরে আজ যেন ফিরেছে পুরনো বাংলাদেশ। টানা চার পরাজয়ের দুঃস্বপ্ন ভুলে অবশেষে জয় দেখল মেহেদী হাসান মিরাজ ও মুস্তাফিজুর রহমানের দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৭৪ রানের দাপুটে এই জয় এনে দিয়েছে তরুণ লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন—যিনি নিজের ক্যারিয়ারের সেরা ও বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য রেকর্ড গড়েছেন।
২০৮ রানের অপেক্ষাকৃত স্বল্প লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৫১ রানের উদ্বোধনী জুটিতে দারুণ সূচনা পায় ক্যারিবীয়রা। অ্যালিক অ্যাথানাজে ও ব্র্যান্ডন কিংয়ের জুটিতে ম্যাচ তখন বাংলাদেশের হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম। কিন্তু ঠিক সেই সময় মিরপুরের টার্নিং ট্র্যাকে বল হাতে ম্যাজিক দেখান মাত্র ২৩ বছর বয়সী রিশাদ।
এক এক করে উইকেট তুলে নিয়ে বিপর্যস্ত করে দেন প্রতিপক্ষকে। ৭৯ রানে ১ উইকেট থেকে ৯২ রানে ৫ উইকেটে রূপ নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস—সবই রিশাদের ঘূর্ণির কারুকার্যে। শেষ পর্যন্ত তিনি ৩৫ রানে ৬ উইকেট শিকার করে ক্যারিবীয়দের ইনিংস গুটিয়ে দেন মাত্র ১৩৩ রানে। ইনিংসের শেষ উইকেটটিও ছিল তার শিকার।
এই ম্যাচে প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়লেন রিশাদ, যা তাকে বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। এর আগে কোনো ডানহাতি স্পিনার ওয়ানডেতে পাঁচ উইকেট নিতে পারেননি। রাজিন সালেহ ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪ উইকেট নিয়ে ছিলেন শীর্ষে। এবার সেই রেকর্ড ভাঙলেন রিশাদ।
এছাড়া তিনি বাংলাদেশের প্রথম স্পিনার হিসেবে এক ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। এই তালিকায় এর আগে নাম ছিল শুধু মাশরাফি বিন মর্তুজা, রুবেল হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমানের।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ২০৭ রানে অলআউট হয়। ব্যাট হাতে তাওহিদ হৃদয় ৫১ রান করে দলের হাল ধরেন, অভিষেক ম্যাচে ৪৬ রান করেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। শেষদিকে ঝোড়ো ২৬ রান যোগ করেন রিশাদ, যা পরবর্তীতে ম্যাচের গতিপথ বদলে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এই জয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে দীর্ঘদিন পর আত্মবিশ্বাস ফিরে পেল বাংলাদেশ দল।











