জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলার আসামিদের দেশের বাইরে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ। আদালতের নির্দেশে পুনঃতদন্ত চলমান থাকায় রমনা থানা ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দিয়েছে—যেন কোনো আসামি দেশ ত্যাগ করতে না পারেন।
রমনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম ফারুক বলেন,
“আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্ত এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। তাই আসামিদের বিদেশে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দেশের সব বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন ইউনিটকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করা হয়েছে।
সালমান শাহ মামলা নতুন মোড়ে
নব্বইয়ের দশকের সুপারস্টার সালমান শাহর মৃত্যুকে শুরুতে “আত্মহত্যা” হিসেবে উল্লেখ করা হলেও শুরু থেকেই তা মেনে নেননি তাঁর পরিবার। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর, ঢাকার বাসায় রহস্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেন এই জনপ্রিয় অভিনেতা। তাঁর স্ত্রী সামিরা হক দাবি করেন এটি আত্মহত্যা, কিন্তু মা নীলা চৌধুরী শুরু থেকেই অভিযোগ করেন—এটি একটি “পরিকল্পিত হত্যা”।
বহু বছর ধরে অপমৃত্যু মামলা হিসেবে তদন্ত চললেও আদালতে একাধিকবার রিভিশন আবেদন করেন সালমান শাহর মা। অবশেষে, গত ২০ অক্টোবর আদালত মামলাটিকে হত্যা মামলা হিসেবে রূপান্তরের নির্দেশ দেন। পরদিনই সালমান শাহর মামা আলমগীর কুমকুম রমনা থানায় আনুষ্ঠানিকভাবে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এরপর থেকেই পুলিশ নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে। তদন্ত কর্মকর্তাদের দাবি—নতুন সাক্ষ্য, প্রমাণ ও তথ্য যাচাইয়ের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।
১১ আসামির তালিকা
হত্যা মামলায় মোট ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। প্রধান আসামি সালমান শাহর সাবেক স্ত্রী সামিরা হক।
অন্য আসামিরা হলেন—প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, খলনায়ক ডন, লতিফা হক লুসি, ডেভিড, জাভেদ, ফারুক, রুবি (মেফিয়া বিউটি সেন্টার), আবদুস সাত্তার, সাজু ও রিজভী আহমেদ ফরহাদ।
তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা জানান, পুনঃতদন্তে পূর্বের প্রতিবেদন ও সাক্ষ্য পুনর্মূল্যায়ন করা হবে এবং প্রয়োজনে নতুন সাক্ষীদের জবানবন্দি নেওয়া হবে।
সালমান শাহর মৃত্যু বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের ইতিহাসে এক অমীমাংসিত অধ্যায় হয়ে আছে। দীর্ঘ ২৯ বছর পর মামলাটি নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে।











