শীতের আগেই অনেকের হাতে-পায়ে চামড়া ওঠা শুরু হয়। অনেকে ভাবে এটা কেবল আবহাওয়ার প্রভাব — কিন্তু সত্যিটা তেমন নয়! যদি সারা বছরই হাত-পায়ের ত্বক খসখসে হয়ে যায়, চামড়া উঠতে থাকে, তাহলে এটি আসলে শরীরের এক ধরনের ভিটামিন ডেফিসিয়েন্সি বা সতর্কবার্তা।
চিকিৎসা পরিভাষায় এ অবস্থাকে বলা হয় “Keratolysis Exfoliativa”, অর্থাৎ ত্বকের বাইরের স্তরটি বারবার উঠে যাওয়া।
কেন এমন হয়?
ত্বকের এই সমস্যার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ থাকতে পারে, যেমন—
- পর্যাপ্ত ভিটামিন ও পুষ্টির অভাব
- বারবার হাত ধোয়া বা ডিটারজেন্টে সংস্পর্শ
- পানিশূন্যতা ও শুষ্ক আবহাওয়া
- বংশগত প্রবণতা বা দুর্বল ইমিউন সিস্টেম
- একজিমা বা ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন
তবে সবচেয়ে বড় কারণ হলো — ভিটামিনের ঘাটতি। এবার দেখে নেওয়া যাক কোন ভিটামিনগুলো ত্বককে রক্ষা করে
ভিটামিন A
ত্বকের কোষ নতুন করে গঠনে ও রুক্ষতা দূর করতে সাহায্য করে।
অভাব হলে: ত্বক শুষ্ক, রুক্ষ ও চামড়া ওঠে।
পাওয়া যায়: গাজর, কুমড়া, পাকা পেঁপে, পালং শাক, ডিম ও দুধে।
ভিটামিন B12
ত্বকের কোষ, স্নায়ু ও রক্তকণিকার জন্য জরুরি।
অভাব হলে: ত্বকের রঙ ফ্যাকাশে, চামড়া উঠতে পারে।
পাওয়া যায়: মাছ, মাংস, ডিম, দই ও ছোলায়।
ভিটামিন C
ত্বককে রাখে ইলাস্টিক ও উজ্জ্বল, ক্ষত নিরাময়ে সহায়তা করে।
অভাব হলে: ত্বক নিস্তেজ ও খসখসে হয়।
উৎস: লেবু, পেয়ারা, কমলা, আমলকি, টমেটো।
ভিটামিন D
ত্বকের কোষ পুনর্গঠনে ও ইমিউন সিস্টেমে কাজ করে।
অভাব হলে: ত্বক নিস্তেজ, ব্যথা বা ক্লান্তি দেখা দেয়।
উৎস: সূর্যের আলো, মাছ, দুধ, ডিমের কুসুম।
ভিটামিন E
ত্বকের প্রাকৃতিক প্রটেকশন দেয়, কোষ নবায়ন করে।
অভাব হলে: ত্বক খসখসে হয়ে যায়, চামড়া উঠে।
উৎস: বাদাম, অ্যাভোকাডো, সূর্যমুখী তেল, তৈলাক্ত মাছ।
চিকিৎসকদের টিপস:
ভিটামিন B3-এর ঘাটতি বা A-এর অতিরিক্ত উপস্থিতিতেও একই সমস্যা হতে পারে।
নিয়মিত শাকসবজি, ফলমূল, মাছ, ডিম ও দুধ খেলে ত্বক ভেতর থেকে পুষ্ট হয়।
বাহ্যিক যত্নের চেয়ে ভেতরের পুষ্টিই দেয় প্রকৃত উজ্জ্বলতা।
স্মরণ রাখুন:
হাতে-পায়ে চামড়া ওঠা শুধু শীতকালীন ঝামেলা নয়, এটি আপনার শরীরের ভিতরের সংকেতও হতে পারে। তাই যদি বারবার এমনটা হয়, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।











