ইসলামাবাদের আদালত ভবনের বাইরে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক আত্মঘাতী হামলার তদন্তে নতুন অগ্রগতি জানিয়েছে পাকিস্তান সরকার। তারা বলছে, হামলার সঙ্গে যুক্ত একটি সেলের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যারা আফগানিস্তানভিত্তিক নেতৃত্বের নির্দেশনায় কাজ করছিল।
মঙ্গলবারের এই হামলার দায় গ্রহণ করেছে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) একটি শাখা। ঘটনাস্থলে বিস্ফোরণে ১২ জন প্রাণ হারায়, আহত হয় আরও অনেকে। তদন্ত কর্মকর্তাদের দাবি, আটক চারজনই টিটিপির সঙ্গে যুক্ত এবং হামলার পরিকল্পনা, প্রস্তুতি ও বাস্তবায়নের ধাপগুলো সীমান্তের ওপার থেকে সমন্বয় করা হয়েছিল।
সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সেলের কথিত কমান্ডারও রয়েছে এবং তদন্তে আরও গ্রেপ্তারের আভাস পাওয়া গেছে। পাকিস্তান হামলাকারীর পরিচয়ও প্রকাশ করেছে—তার নাম উসমান, যিনি ‘কারি’ নামেও পরিচিত। তিনি আফগানিস্তানের নাঙ্গারহার প্রদেশের বাসিন্দা। তবে অভিযুক্তদের কোথায় থেকে ধরা হয়েছে, তা প্রকাশ করেনি কর্তৃপক্ষ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভি দেশটির সিনেটে বলেন, হামলাকারী একজন আফগান নাগরিক—যা দুই দেশের সম্পর্কের বর্তমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসলামাবাদে বড় ধরনের হামলা কম হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মতে, সীমান্তে আশ্রয় নেওয়া সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সক্রিয়তা আবারও বেড়েছে।
নকভির দাবি, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ওয়ানা ক্যাডেট কলেজে হওয়া সাম্প্রতিক হামলাতেও আফগান নাগরিকরা জড়িত ছিল। যদিও আফগান তালেবান সরকার এসব অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার না করলেও কেবল ‘দুঃখ’ এবং ‘নিন্দা’ জানিয়েই ক্ষান্ত থেকেছে।
দুই দেশের মধ্যকার সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষ ছিল বহু বছরের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী—জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী মারা গেছে ৭০ জনের বেশি মানুষ, যাদের অনেকেই আফগান বেসামরিক নাগরিক। অস্থায়ী অস্ত্রবিরতি হলেও সমঝোতার নানা বিষয় অনির্দিষ্ট রয়ে গেছে, উভয়পক্ষই পরস্পরকে দায়ী করছে।
এই পরিস্থিতিতে ইসলামাবাদে নতুন হামলাগুলো আবারও উত্তেজনা বাড়ানোর শঙ্কা তৈরি করেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শহবাদ শরিফ পার্লামেন্টে বলেন, “এটি নৃশংস সন্ত্রাসবাদ। আমরা শান্তি চাই, এবং চাই আফগানিস্তানও শান্তির অংশীদার হোক। কিন্তু সন্ত্রাসীদের অবাধে চলতে দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়।”
