খুলনার মুক্তিযোদ্ধা কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই সংঘর্ষে সাংবাদিক, পুলিশ সদস্য এবং স্থানীয় বাসিন্দা সহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন। রবিবার সকালে খুলনার বাস্তুহারা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষের বিবরণ
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে মাইকিং করে বাসিন্দাদের বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। রবিবার সকালে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ এক্সকাভেটর ও বুলডোজার নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। এ সময় এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে মসজিদের মাইক থেকে এলাকাবাসীকে রাস্তায় আসার আহ্বান জানানো হয়। বাসিন্দারা রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করলে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে। জবাবে বাসিন্দারা ইটপাটকেল ছুঁড়ে, টায়ার ও গাছের গুঁড়ি পুড়িয়ে সড়ক অবরোধ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। এই সংঘর্ষের সময় জনতা একটি এক্সকাভেটরও ভাঙচুর করে।
আহতদের তালিকা ও পুনর্বাসনের দাবি
সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে প্রথম আলোর ফটোসাংবাদিক সাদ্দাম হোসেন, ডেইলি স্টারের ফটোসাংবাদিক হাবিবুর রহমান এবং আরটিভির ক্যামেরাপারসন গাজী মো. দুলাল রয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের ১৪ জন সদস্য আহত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করছেন যে, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত তারা কোনোভাবেই উচ্ছেদ হতে দেবেন না। তাদের একজন বাসিন্দা বলেন, “আমাদের বাপ-দাদা এখানে মারা গেছেন। কোনো ব্যবস্থা না করে কেন উচ্ছেদ চলবে? আমরা তাহলে দাঁড়াব কোথায়?”
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাস্তুহারা এলাকার এই জায়গাটি আসলে ‘বয়রা আবাসিক এলাকা’র অংশ, যেখানে ১৯৮৭ সালে ৪২টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ৩৮ বছর ধরে এসব প্লট অবৈধ দখলে থাকায় প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি। তারা আরও জানান, অতীতেও রাজনৈতিক কারণে বারবার উচ্ছেদ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউর রহমান বলেন, “আমরা আজ সকালে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে গেলে বাধার সম্মুখীন হই। আপাতত উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করা হয়েছে।” খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর আতাহার আলী জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।











