সাম্প্রতিক সময়ে হারবাল ড্রিংকসের তালিকায় গোলাপের চা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেকেই দাবি করছেন, এটি হৃদ্যন্ত্রকে সুরক্ষা দেয়, ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বককে করে তোলে সতেজ। তবে আসলেই কি এতটা কার্যকর গোলাপের চা? এ বিষয়ে মত দিয়েছেন টাঙ্গাইলের কুমুদিনী সরকারি কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রধান শম্পা শারমিন খান।
অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের ভাণ্ডার
গোলাপ ফুলে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। নিয়মিত নির্যাস গ্রহণ করলে দেহে নানা উপকার মেলে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, সরাসরি নির্যাস থেকে তৈরি পানীয়তে উপকার বেশি পাওয়া যায়। চা তৈরির সময় কিছু পুষ্টি উপাদান নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
ক্যাফেইনমুক্ত বিকল্প
চা–কফির অতিরিক্ত ক্যাফেইন শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। গোলাপের চায়ে সাধারণত ক্যাফেইন থাকে না। ফলে অনিদ্রা বা স্নায়ুচাপে ভুগতে হয় না। সন্ধ্যায়ও অনায়াসে এটি পান করা যায়। তবে বাজারে কিছু গোলাপ চায়ে আলাদাভাবে ক্যাফেইন মেশানো হতে পারে—তাই কেনার সময় লেবেল দেখে নেওয়া জরুরি।
দীর্ঘমেয়াদি রোগ ও ওজন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা
গোলাপ চা শরীরে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট যোগায়, যা হৃদ্রোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। এটি মেটাবলিজম বাড়িয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখতে পারে। তবে শুধু গোলাপ চা খেয়ে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন সম্ভব নয়—প্রয়োজন সুষম খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়াম।
ত্বকের যত্ন ও নারীদের স্বস্তি
নিয়মিত গোলাপ চা পান করলে ত্বক সতেজ হয়। এছাড়া প্রদাহ ও ব্যথা কমাতেও এটি কাজে দেয়। বিশেষ করে মাসিকের অস্বস্তি কমাতে এক কাপ গোলাপ চা দারুণ আরাম দিতে পারে। পাশাপাশি হালকা জীবাণুরোধী প্রভাবও রাখতে সক্ষম।
কিছু সতর্কতা
-
যেকোনো গোলাপ দিয়ে চা বানানো গেলেও তিতকুটে প্রজাতির বদলে হালকা মিষ্টি স্বাদের গোলাপ ব্যবহার করুন।
-
চিনি বা কৃত্রিম সুইটেনার এড়িয়ে চলুন, তবেই পানীয়টি স্বাস্থ্যকর থাকবে।
-
রাসায়নিকমুক্ত বাগানের গোলাপ ব্যবহার করা উত্তম। চাইলে নিজের গাছের পাপড়ি শুকিয়ে সংরক্ষণ করে চা বানাতে পারেন।
-
পাপড়ি গরম পানিতে ২–৩ মিনিট ঢেকে রাখলে পুষ্টি উপাদান ভালোভাবে মিশে যায়।
সারসংক্ষেপ
গোলাপ চা এক ধরনের সহায়ক স্বাস্থ্যকর পানীয়, তবে এটি কোনোভাবেই রোগ প্রতিরোধ বা নিরাময়ের মূল সমাধান নয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন বজায় রাখলে গোলাপ চা হতে পারে তার সুন্দর একটি অংশ।











