নোয়াখালী সদর উপজেলার নেওয়াজপুর ইউনিয়নের কাশেম বাজারে আজ রোববার বিকেলে মসজিদভিত্তিক কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় দলের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেল পাঁচটার দিকে কাশেম বাজার জামে মসজিদে কুরআন শিক্ষা ও দারসুল কুরআন কর্মসূচিকে ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। ইটপাটকেল নিক্ষেপ, লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে উভয়পক্ষের বহুজন আহত হন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ ঘটনায় এলাকায় এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুধারাম মডেল থানার ওসি মো. কামরুল ইসলাম।
নোয়াখালী জেলা ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক ফজলে রাব্বী অভিযোগ করে বলেন, “শনিবার আমাদের দারসুল কুরআন প্রোগ্রামে যুবদলের কর্মীরা হামলা চালিয়েছিল। আজ তার প্রতিবাদে একই স্থানে কর্মসূচি চলাকালে বিএনপি পুনরায় আক্রমণ করে। এতে আমাদের ২৫ জন আহত হয়েছেন।” আহতদের মধ্যে শিবির নেতা তানভীর সিয়াম, নাঈম হোসেন, ছালাউদ্দিন, আরাফাত, মিশুসহ বেশ কয়েকজনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, স্থানীয় বিএনপি নেতারা পাল্টা অভিযোগ তুলে বলেন, “আসরের নামাজের পর শিবির মসজিদে স্লোগান দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। বাধা দিলে তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়।” এ ঘটনায় বিএনপির অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি তাদের। আহতদের মধ্যে নেওয়াজপুর ইউনিয়ন বিএনপির প্রচার সম্পাদক আক্তার হোসেন, দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর ও সাবেক ছাত্রদল সভাপতি জিয়াউর রহমান রয়েছেন।
সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ভিপি জসিম বলেন, “জামায়াত-শিবিরের হামলায় আমাদের ২০ জন আহত হয়েছেন। আমরা হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করছি।”
অন্যদিকে জেলা জামায়াতের আমির ইসহাক খন্দকার অভিযোগ করেন, “বিএনপির হামলায় আমাদের ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পরে তারা মসজিদে তালা মেরে দেয়।”
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. লিয়াকত আকবর জানান, “মসজিদে জামায়াত-শিবিরের কর্মসূচি চলাকালে বিএনপির বাধা দেয়ায় সংঘর্ষ হয়। কতজন আহত হয়েছে তা যাচাই চলছে।”
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ মো. সেলিম জানান, “রাত ৮টা পর্যন্ত ৩৬ জন চিকিৎসা নিয়েছেন, আরও অনেকে চিকিৎসার অপেক্ষায় আছেন।”
পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এলাকায় উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সহিংসতা ঠেকাতে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।










