একটা সময় মনে হচ্ছিল জয়টা হাতের মুঠোয়। নিগার সুলতানা জ্যোতি ও শারমিন সুপ্তার ব্যাটে আত্মবিশ্বাসী ছন্দে এগোচ্ছিল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। কিন্তু সুপ্তার চোট ও শেষ মুহূর্তের ব্যাটিং বিপর্যয়ে ভেসে গেল সেই আশার গল্প। মাত্র ৭ রানের হৃদয়ভাঙা পরাজয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের তিক্ত স্বাদ নিয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ওয়ানডে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হলো বাংলাদেশের মেয়েদের।
সোমবার মুম্বাইয়ের ড. ডিওয়াই পাতিল স্পোর্টস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিং নেয় শ্রীলঙ্কা। শুরুটা একেবারেই ভালো ছিল না — ইনিংসের প্রথম বলেই হারায় উইকেট। তবে অধিনায়ক চামারি আতাপাথু ও বিশাখা সঞ্জীবনীর জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় লঙ্কানরা। দ্বিতীয় উইকেটে আসে ৭২ রানের পার্টনারশিপ। বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দেন তরুণ স্পিনার রাবেয়া খান, আতাপাথুকে (৪৩ বলে ৪৬) সাজঘরে ফেরান তিনি।
এরপর ধারাবাহিকভাবে নাহিদা আক্তার ও মারুফা আক্তারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কা। ১০০ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে দলটি। তবে ষষ্ঠ উইকেটে নিলাক্ষ্মী ও হাসিনি পেরেরার ৭৪ রানের জুটিতে আবারও লড়াইয়ে ফেরে লঙ্কানরা। ওপেনার পেরেরা একাই লড়েন দারুণভাবে—৯৯ বলে ৮৫ রানের ইনিংসে আসে ১৩টি চার ও ১টি ছক্কা। শেষ পর্যন্ত ৪৯.২ ওভারে ২০২ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা।
জবাবে ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো করেছিল বাংলাদেশ। ওপেনার মুর্শিদা খাতুন দ্রুত আউট হলেও জ্যোতি ও সুপ্তার জুটিতে আশার আলো জ্বলে। দুজনের ব্যাটে দলের স্কোর যখন স্থিতিশীল, তখনই ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন সুপ্তা। এরপর জ্যোতির দৃঢ়তায় জয়ের পথে এগোলেও শেষের ওভারে হঠাৎ ধস নেমে আসে। মাত্র কয়েক রানের ব্যবধানে হারিয়ে যায় একের পর এক উইকেট, থেমে যায় বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্ন।
ম্যাচ শেষে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি বলেন, “আমরা আসলে খুব কাছাকাছি পৌঁছেও ম্যাচটা শেষ করতে পারিনি। শেষের দিকের কিছু ভুলই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।”
এই হারের ফলে এক ম্যাচ হাতে থাকতেই বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হলো বাংলাদেশের। তবে পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে তরুণ স্পিনার রাবেয়া খান ও অলরাউন্ডার নাহিদা আক্তারের পারফরম্যান্সে ভবিষ্যতের আশাবাদ দেখছেন সমর্থকেরা।











