বর্তমান সময়ে ডায়াবেটিস এমন এক স্বাস্থ্য সমস্যা, যা প্রায় প্রতিটি পরিবারেরই পরিচিত নাম। অনেকের ক্ষেত্রেই রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক সীমার উপরে থাকলেও এখনো ডায়াবেটিস ধরা পড়ে না। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এই অবস্থাকে বলা হয় ‘প্রি-ডায়াবেটিস’। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সময়টিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—কারণ সামান্য অসাবধানতাই টাইপ–২ ডায়াবেটিসে রূপ নিতে পারে।
অতিরিক্ত ক্যালরি ও কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব এবং মানসিক চাপ রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয়। তাই খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি কিছু প্রাকৃতিক পানীয় দৈনন্দিন জীবনে যুক্ত করলে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। বিশেষ করে সকালে খালি পেটে নিচের পাঁচটি পানীয় নিয়মিত গ্রহণ করলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।
১. মেথি ভেজানো পানি
মেথিতে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার রক্তে শর্করার শোষণ প্রক্রিয়া ধীর করে দেয়। রাতে এক চামচ মেথি পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানি পান করলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
২. করলার রস
করলায় উপস্থিত ইনসুলিন সদৃশ উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। যদিও স্বাদে তেতো, করলার রস প্রি-ডায়াবেটিস ও ডায়াবেটিস—দুই অবস্থাতেই কার্যকর প্রমাণিত।
৩. দারচিনির চা
দারচিনিতে থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায়। গরম পানিতে দারচিনির কাঠি বা গুঁড়া মিশিয়ে তৈরি এই চা প্রতিদিন পান করলে রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় থাকে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক হয়।
৪. আমলকির রস
আমলকি ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এটি ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা উন্নত করে ও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। নিয়মিত আমলকির রস পান করলে মেটাবলিজম ভালো থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৫. গ্রিন টি
গ্রিন টিতে থাকা ক্যাটেচিন ও পলিফেনল নামের যৌগ ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করে এবং শরীরের বিপাক হার বাড়ায়। প্রতিদিন ৩–৪ কাপ গ্রিন টি পান করলে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ওজনও কমে।
চিকিৎসকরা মনে করেন, সচেতন খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম ও এসব প্রাকৃতিক পানীয়—এই তিনটি অভ্যাস বজায় রাখলেই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে আনা যায়।











