দিনের কাজের চাপে অনেকে এখন রাতে ঘুমানোর সময় কমিয়ে দিচ্ছেন। কেউ অফিসের রিপোর্ট শেষ করছেন, কেউ আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যস্ত—ফলাফল, ঘুমের সময় দিনে দিনে কমছে। কিন্তু জানেন কি, টানা তিন দিন যদি আপনি চার ঘণ্টা বা তার কম ঘুমান, তাহলে শরীরের ভেতরে এমন কিছু পরিবর্তন ঘটে যা সরাসরি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়!
সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য—কম ঘুম শরীরে এমন এক প্রোটিন তৈরি করে যা রক্তে প্রদাহ ঘটায় এবং ধমনীর ক্ষতি করে। এই প্রদাহ দীর্ঘস্থায়ী হলে হার্ট ফেইলিউর, অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন এমনকি হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক পর্যন্ত ঘটতে পারে।
গবেষকরা ১৬ জন তরুণ সুস্থ পুরুষের ওপর পরীক্ষা চালান। প্রথম তিন দিন তাদের ঘুমাতে দেওয়া হয় ৮ ঘণ্টা ৩০ মিনিট করে, আর পরের তিন দিন মাত্র ৪ ঘণ্টা ২৫ মিনিট। এরপর রক্ত পরীক্ষায় দেখা যায়—যারা কম ঘুমিয়েছে, তাদের রক্তে প্রদাহজনিত প্রোটিনের পরিমাণ হঠাৎ বেড়ে গেছে।
আরও আশ্চর্যের বিষয়, নিয়মিত ব্যায়াম করলেও এই প্রোটিনের মাত্রা কমে না। অর্থাৎ, কম ঘুমের ক্ষতি শরীরচর্চাও পূরণ করতে পারে না।
শিশুদের দিনে যেখানে ১২-১৫ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন, সেখানে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যও কমপক্ষে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। কিন্তু আধুনিক জীবনের ব্যস্ততায় যখন ঘুম নেমে আসে ৩-৪ ঘণ্টায়, তখন শরীর অজান্তেই বিপদের মুখে পড়ে।
ঘুমের ঘাটতি শুধু ক্লান্তিই আনে না, এটি মানসিক চাপ, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ও মেটাবলিজমের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে—যা দীর্ঘমেয়াদে শরীরের সার্বিক কার্যক্রমে বিপর্যয় সৃষ্টি করে।
সংক্ষেপে:
টানা ৩ দিন ৪ ঘণ্টার কম ঘুম = রক্তে প্রদাহজনিত প্রোটিন বৃদ্ধি
ধমনী ক্ষতি ও হৃদরোগের ঝুঁকি
ব্যায়াম করলেও ঝুঁকি কমে না
দীর্ঘমেয়াদি কম ঘুম মানে শরীরের ওপর স্থায়ী প্রভাব
তাই যত ব্যস্তই থাকুন না কেন, ৭-৮ ঘণ্টার মানসম্মত ঘুমই হতে পারে সবচেয়ে কার্যকর ওষুধ।











