হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশের ওষুধশিল্প। বাংলাদেশ ওষুধশিল্প সমিতির (BAPI) হিসাব অনুযায়ী, এই অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ২০০ কোটি টাকারও বেশি ওষুধ উৎপাদনের কাঁচামাল সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে।
সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (EAB) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সমিতির মহাসচিব মো. জাকির হোসেন।
তিনি বলেন, “বর্তমানে দেশে ৩০৭টি ওষুধ কোম্পানির মধ্যে ২৫০টি সক্রিয়ভাবে উৎপাদন করছে। এর মধ্যে ৩২টি শীর্ষ কোম্পানি জানিয়েছে, তাদের কাঁচামালের ক্ষতি ২০০ কোটি টাকার বেশি। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর হিসাব যোগ হলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছি।”
ইএবি সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম লিখিত বক্তব্যে জানান, এই অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ খাতের সরবরাহ চেইন বড় ঝুঁকিতে পড়েছে। তিনি বলেন, “একটি ওষুধ তৈরিতে কখনও কখনও ৫০টিরও বেশি উপকরণ প্রয়োজন হয়। ফলে এই কাঁচামাল নষ্টের প্রভাব ভবিষ্যতে ওষুধ উৎপাদনকে বড় ধরনের চাপে ফেলতে পারে।”
মো. জাকির হোসেন আরও জানান, “এই ক্ষতি শুধুমাত্র তাৎক্ষণিক নয়, এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি। ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল নষ্ট হওয়ার মানে প্রায় ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার কোটি টাকার ওষুধ উৎপাদন বিলম্বিত হতে পারে।”
অগ্নিকাণ্ডের সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের অভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। “ওষুধের কাঁচামাল সংরক্ষণে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা অত্যন্ত জরুরি। শনিবারের আগুনের সময় কিছু বিমান বিকল্পভাবে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু সেখানেও সঠিক সংরক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায় সেসব উপকরণ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে,” বলেন তিনি।
তিনি আরও দাবি করেন, “অন্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও বিমানবন্দরের কার্গো অপারেশন সারাবছর ৩৬৫ দিন চালু রাখা জরুরি। এতে এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত রেসপন্স ও পণ্য খালাস নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।”
অগ্নিকাণ্ডে সৃষ্ট ক্ষতির সঠিক পরিমাণ এখনো নির্ধারণ করা না গেলেও, ওষুধ শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন—এই ঘটনার প্রভাব দেশীয় ফার্মাসিউটিক্যাল খাতের অর্থনীতিতে গভীর দাগ ফেলবে।











