জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। তদন্তে জানা গেছে, বার্জিস শাবনাম বর্ষা ও তার সাবেক প্রেমিক মাহির রহমানের জটিল সম্পর্কের দ্বন্দ্বই এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ।
সোমবার সকালে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি রফিকুল ইসলাম) প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের জানান, বর্ষার সঙ্গে মাহির নয় বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল, তবে সম্প্রতি তাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। এ সময় বর্ষা মাহিরকে জানান যে তিনি জোবায়েদকে পছন্দ করেন। যদিও বর্ষা দাবি করেছেন—তার সঙ্গে জোবায়েদের কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল না।
ওসি বলেন, “বর্ষার কথায় ক্ষুব্ধ হয়ে মাহির তার এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে জোবায়েদকে খুন করে। এটি একেবারে প্রেমঘটিত হত্যাকাণ্ড। জোবায়েদ হয়ে উঠেছে বর্ষা-মাহিরের দীর্ঘদিনের সম্পর্কের বলি।”
তিনি আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদের সময় বর্ষার আচরণ ছিল শান্ত ও সংযত। “তার চেহারায় কান্না বা অনুশোচনার কোনো ছাপ পাওয়া যায়নি,” বলেন রফিকুল ইসলাম। “তবে আমরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। বিস্তারিত জানা গেলে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র জোবায়েদ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন। এছাড়া তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতির দায়িত্বও পালন করছিলেন।
গত এক বছর ধরে তিনি পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় ‘রৌশান ভিলা’ নামের একটি বাড়িতে বসে ছাত্রী বর্ষাকে পদার্থ, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান পড়াতেন। পুলিশ জানায়, রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সেখানেই ঘটে হত্যাকাণ্ড। ঘটনাস্থলের তিনতলা থেকে নিচতলা পর্যন্ত রক্তের দাগ পাওয়া যায়। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
ঘটনার পর রাতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা বংশাল থানার সামনে অগ্নিবিক্ষোভ ও তাঁতিবাজার মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন। পরে রাত ১১টার দিকে পুলিশ বর্ষাকে হেফাজতে নেয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।
তবে এখনো পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি, এবং মূল অভিযুক্ত মাহির রহমান ও তার সহযোগী পলাতক রয়েছেন। ওসি রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, “অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”











