ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে অনেকেই ভেবেছিলেন রোহিত শর্মার সময় ফুরিয়ে গেছে। বয়স ৩৮ ছুঁইছুঁই—তাই কেউ কেউ তো তাকে কার্যত অবসরের তালিকাতেই ফেলে দিয়েছেন। কিন্তু রোহিত আজ সিডনির মাঠে ব্যাট হাতে প্রমাণ করলেন, অভিজ্ঞতার দাম এখনো কমে যায়নি।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে তার দুর্দান্ত সেঞ্চুরির উপর ভর করে ভারত ৯ উইকেটের বিশাল জয় পেয়েছে। সেই সঙ্গে ধবলধোলাইয়ের লজ্জা এড়িয়েছে অধিনায়ক শুবমান গিলের দল। ৬৯ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেওয়ার মাধ্যমে ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে নিজের প্রথম জয়ও পেয়েছেন গিল।
রোহিতের ব্যাটে আজ ছিল আগের দিনের ক্ষোভ, আত্মবিশ্বাস আর শৃঙ্খলার মিশ্রণ। অ্যাডিলেডে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি হাতছাড়া হয় তার—মাত্র ৭৩ রানে থেমেছিলেন। আজ সেই আক্ষেপ মেটালেন অসাধারণ এক ইনিংসে। অ্যাডাম জাম্পার বলে লং অফে সিঙ্গেল নিয়ে যখন শতরান পূর্ণ করলেন, তখন কোনো উচ্ছ্বাস নয়—শুধু ব্যাটটা উঁচিয়ে ধরলেন। যেন সমালোচকদের উদ্দেশে নীরব বার্তা—‘উত্তর ব্যাটেই দিয়েছি।’
অপরাজিত ১২১ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১৩টি চার ও ৩টি ছক্কায়। অন্য প্রান্তে ছিলেন বিরাট কোহলি—ফিরেছেন নিজ ছন্দে, খেলেছেন ৭৪ রানের ঝলমলে ইনিংস। দুজনে মিলে গড়েছেন ১৬৮ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি, যা ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয় আগেই।
ওপেনিংয়ে রোহিতের সঙ্গী গিল ২৪ রানে আউট হলেও, তার ব্যাটে আসে আত্মবিশ্বাসী সূচনা। ভারতের লক্ষ্য ছিল ২৩৭ রান—যা তারা অনায়াসেই ছুঁয়ে ফেলে ৬৯ বল হাতে রেখেই।
এর আগে ভারতের বোলাররাও কাজটা সহজ করে দিয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়াকে ২৩৬ রানে থামিয়ে দেয় হারশিত রানা ও ওয়াশিংটন সুন্দরদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং। রানা একাই তুলে নেন ৪ উইকেট। শুরুটা ভালো করলেও—মিচেল মার্শ (৪১) ও ট্রাভিস হেড (২৯)-এর ৬১ রানের জুটি ভাঙতেই ধস নামে অজিদের ইনিংসে। ম্যাট রেনশ ৫৬ রান করেও দলকে টেনে নিতে পারেননি।
এই জয় ভারতের জন্য শুধু একটি ম্যাচ জয় নয়—এটি ছিল অভিজ্ঞতা ও তরুণ নেতৃত্বের সফল সংমিশ্রণের প্রতীক। যেখানে রোহিতের সেঞ্চুরি দেখালো, বয়স নয়, ফর্মই আসল শক্তি।











