রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রো রেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে নিচে পড়ে পথচারী নিহত হওয়ার ঘটনায় এবার হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। ঢাকার সব ফ্লাইওভার ও মেট্রো রেল প্রকল্পে ব্যবহৃত বিয়ারিং প্যাডের মান যাচাই ও স্থায়িত্ব নিশ্চিতের নির্দেশনা চেয়ে এই রিট দাখিল করা হয়।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন জনস্বার্থে রিট আবেদনটি করেন। এতে বিবাদী করা হয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু সচিব, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল), ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটি (ডিটিসিএ) এবং ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেড-কে।
রিট আবেদনে বলা হয়, রাজধানীর মেট্রো রেল ও বিভিন্ন উড়ালসড়ক প্রকল্পে ব্যবহৃত বিয়ারিং প্যাডের মান নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। এগুলোর স্থায়িত্ব, নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী স্থাপনা যাচাই করা হয়নি বলেও উল্লেখ করা হয়।
আবেদনকারী আদালতের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন, ঢাকার সকল ফ্লাইওভার, ওভারপাস ও মেট্রো রেলের বিয়ারিং প্যাডের মান যাচাই করে রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশনা দিতে। পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর অবহেলা, গাফিলতি ও দায়িত্বহীনতা নিরূপণ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করার আবেদনও করা হয়েছে।
রিটে আরও উল্লেখ করা হয়, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে করা অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের নির্দেশনাও দিতে হবে। জানা গেছে, বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে চলতি সপ্তাহেই রিটের শুনানি হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত রবিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রো রেলের একটি পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড খুলে নিচে পড়ে আবুল কালাম (৪৫) নামে এক পথচারী মারা যান। তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঈশ্বরকাঠি গ্রামে।
এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে রেল ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেন এবং নিহতের পরিবারের কোনো বেকার সদস্যকে মেট্রো রেলে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেন।
এদিকে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার সকালে নিহতের গ্রামের বাড়ি ঈশ্বরকাঠিতে তার দ্বিতীয় জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়, যেখানে স্থানীয় শত শত মানুষ অংশ নেন এবং মর্মান্তিক এই ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।











