সুদানের দারফুর অঞ্চলের আল-ফাশার শহরে র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর হাতে সংঘটিত গণহত্যা ও ধর্ষণের ঘটনার প্রমাণ সংগ্রহ শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। সোমবার (৩ নভেম্বর) রয়টার্স এমন খবর জানিয়েছে, যা নিশ্চিত করেছেন আদালতের সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
২০০৫ সাল থেকে দারফুরে সংঘটিত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত করছে আইসিসি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ২০০৩–২০০৪ সালের ভয়াবহ সহিংসতার পর এ মামলার বিষয়টি প্রথম আদালতের নজরে আনে।
আইসিসির প্রসিকিউটর কারিম খান এক বিবৃতিতে বলেন,
“চলমান তদন্তের অংশ হিসেবে আদালত আল-ফাশারে সংঘটিত অপরাধের বিষয়ে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতের বিচারিক প্রক্রিয়ায় ব্যবহারের জন্য প্রাসঙ্গিক প্রমাণ সংরক্ষণ ও সংগ্রহ করা যায়।”
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শহরটিতে আরএসএফের অভিযানের পর থেকে ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ পালিয়ে গেছে, এবং স্থানীয়রা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পথে পথে নিরীহ জনতার ওপর হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের মতে, দারফুরে এবার যে সহিংসতার খবর পাওয়া যাচ্ছে, তা ২০০০-এর দশকের শুরুর গণহত্যার ঘটনাগুলোর ভয়াবহ পুনরাবৃত্তি। শহরে এখনো প্রায় দুই লাখ মানুষ অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে, যাদের জীবন ও নিরাপত্তা মারাত্মক ঝুঁকিতে।
রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির প্রধান এক সাক্ষাৎকারে বলেন,
“আরএসএফের আল-ফাশার দখল দারফুরের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে। এর মাধ্যমে সুদানের এক-চতুর্থাংশেরও বেশি অঞ্চল তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।”
উল্লেখ্য, গত মাসেই হেগভিত্তিক আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত দারফুরে ২০ বছর আগে সংঘটিত নৃশংসতার দায়ে প্রথম জানজাউইদ মিলিশিয়া নেতাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে—যা দারফুর গণহত্যা ইস্যুতে একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
