ভারত সম্প্রতি চাল রপ্তানিতে নতুন শর্ত আরোপ করেছে, তবে এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বাজারে কোনো প্রভাব ফেলেনি। দেশের চালের দাম আগের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে, বলছেন সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীরা।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর ভারত ঘোষণা দেয়, বাসমতী ছাড়া অন্য সব ধরনের চাল রপ্তানি করতে হলে কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য রপ্তানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (APEDA) নিবন্ধন নিতে হবে। বাংলাদেশ যেহেতু মূলত নন-বাসমতী বা সাধারণ চাল আমদানি করে, তাই এই নতুন শর্তের আওতায় আসে। তবুও খাদ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভারতের যেসব রপ্তানিকারকের কাছ থেকে বাংলাদেশ চাল আমদানি করে, তারা ইতোমধ্যেই নিবন্ধন সম্পন্ন করেছে, ফলে আমদানিতে কোনো বাধা নেই।
খাদ্য অধিদপ্তরের সংগ্রহ বিভাগের পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান জানান, দেশে বর্তমানে প্রায় ১৬ লাখ মেট্রিক টন চালের মজুত রয়েছে, যেখানে ১২ লাখ মেট্রিক টনকেই নিরাপদ মজুত হিসেবে ধরা হয়। আগামী নভেম্বরের পর আমন সংগ্রহ শুরু হলে মজুত আরও বৃদ্ধি পাবে।
অন্যদিকে, বিশ্ববাজারে চালের দামও কমেছে। গত বছর প্রতি টন চালের দাম ছিল প্রায় ৪৭৭ মার্কিন ডলার, বর্তমানে তা নেমে এসেছে ৩৫৯ ডলারে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে এক লাখ টন চাল আমদানির চুক্তি করেছে, এবং ভিয়েতনামের সঙ্গেও একই পরিমাণ আমদানির প্রস্তুতি নিচ্ছে।
খুচরা বাজারেও স্থিতিশীলতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী হাজী রইছ মিয়া জানান, দুই মাস ধরে চালের দাম অপরিবর্তিত — মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়, আর সরু চাল ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। ফার্মগেটের এক ব্যবসায়ীও জানিয়েছেন, মিনিকেট চাল ৮০ টাকায় বিক্রি করছেন, আগের মতোই।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা এবং সরু চাল ৭৫ থেকে ৮৫ টাকার মধ্যে। যদিও ২০২০ সালের শুরুতে মোটা চালের দাম ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, এখন তা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, ভারতীয় শর্ত ও বৈশ্বিক বাজার পরিবর্তন — কোনোটিই বাংলাদেশের চালের বাজারে তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলেনি। পর্যাপ্ত মজুত ও বিকল্প আমদানি উৎস থাকার কারণে বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে।











