শৈশব মানেই খেলাধুলা, হাসি আর নির্ভার সময়। কিন্তু এই নির্ভার মুহূর্তেই ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা—যদি অভিভাবকের নজরদারি শিথিল হয়। খেলতে গিয়ে পড়ে যাওয়া, কেটে যাওয়া, পানিতে ডুবে যাওয়া বা খেলনার অংশ গিলে ফেলা—এসবই প্রায়শই শিশুদের জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়।
শিশুর প্রতি নজর রাখা জরুরি
খেলার সময় শিশু যেন চোখের আড়াল না হয়, এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ঘর বা মাঠ—যেখানেই খেলুক, আশপাশে বিপজ্জনক কিছু আছে কি না তা নিশ্চিত হতে হবে। বিশেষ করে বাড়ির পাশে পুকুর, ড্রেন বা গর্ত থাকলে সেগুলো ঘিরে রাখতে হবে।
খেলনা বাছাইয়ে সচেতনতা
শিশুর বয়স অনুযায়ী খেলনা নির্বাচন করুন। ছোট শিশুদের জন্য এমন খেলনা দিন যাতে ছোট বা আলগা অংশ না থাকে, যা গিলে ফেলার আশঙ্কা থাকে। খেলনার ব্যাটারি যেন ভালোভাবে আটকানো থাকে, ধারালো বা সূচালো প্রান্ত যেন না থাকে।
নিরাপদ খেলার জায়গা
খেলার স্থানটি সমান, পরিষ্কার ও পর্যাপ্ত আলোকিত হওয়া দরকার। মেঝে পিচ্ছিল হলে শিশুর পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। মাঠে বা ঘরে ছেঁড়া বৈদ্যুতিক তার বা ধারালো বস্তু থাকলে আগে থেকেই সরিয়ে ফেলতে হবে। প্রয়োজনে মাদুর বা নরম কার্পেট ব্যবহার করা যেতে পারে।
দুর্ঘটনা ঘটলে করণীয়
- কোনো বস্তু গলায় আটকে গেলে ‘হেইমলিক কৌশল’ প্রয়োগ করা যেতে পারে—শিশুকে বাঁ হাতে উল্টোভাবে ধরে, পিঠে তিন-চারটি চাপড় দিন। না বের হলে চিত করে বুকের মাঝখানে হালকা চাপ দিন।
- কোথাও কেটে গেলে জায়গাটি পরিষ্কার করে অ্যান্টিসেপটিক লাগান এবং কাপড়ে ঢেকে দ্রুত হাসপাতালে যান।
- ছোটখাটো আঘাতে বরফ দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু বেশি ব্যথা বা কান্না হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।
শেষ কথা
খেলা শিশুর বিকাশের অংশ—কিন্তু নিরাপত্তা যেন কখনো অবহেলায় না পড়ে। সচেতন অভিভাবকই পারেন শিশুর আনন্দময় খেলাধুলাকে নিরাপদ করে তুলতে।











