যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা শেষ করা বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য অপশনাল প্র্যাকটিক্যাল ট্রেইনিং (OPT) এক সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ ছিল, যার মাধ্যমে তারা F-1 স্টুডেন্ট ভিসা থেকে H-1B ওয়ার্ক ভিসা-তে রূপান্তর করে ক্যারিয়ার শুরু করতেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই সুযোগ মারাত্মকভাবে সংকুচিত হতে পারে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, সেনেটর টম কটনের প্রস্তাবিত OPT ফেয়ার ট্যাক্স অ্যাক্ট বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য সম্ভাব্য ঝুঁকির ইঙ্গিত দিয়েছিল। এখন আরও কয়েকজন আইনপ্রণেতা, যাদের মধ্যে সেনেটর চাক গ্র্যাসলিস রয়েছেন, ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (DHS)-কে অনুরোধ করেছেন যাতে নতুন করে স্টুডেন্ট ভিসাধারীদের কাজের অনুমতি দেওয়া না হয়।
আইনপ্রণেতাদের যুক্তি, এমন অনুমতি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা তৈরি করবে এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া H-1B ভিসার নিয়মকানুনে পরিবর্তন, কঠোর আইন প্রয়োগ এবং OPT-এর মতো প্রোগ্রাম সংকুচিত বা বন্ধ হওয়ার প্রবণতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগ তৈরি করেছে।
OPT-এ পরিবর্তনের প্রভাব
এফ-১ ভিসাধারী শিক্ষার্থীরা স্নাতক শেষ হওয়ার পর সর্বোচ্চ ১২ মাস, এবং STEM বিষয়ক ক্ষেত্রে আরও দীর্ঘ সময় যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করতে পারেন। কিন্তু নতুন প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, OPT-এর আওতায় কর্মরত শিক্ষার্থী ও নিয়োগদাতা সোশ্যাল সিকিউরিটি ও মেডিকেয়ার (FICA) কর দিতে বাধ্য হবেন, যা যৌথভাবে বেতনের প্রায় ১৫.৩ শতাংশ। এর ফলে শিক্ষার্থীদের হাতে পাওয়া বেতন কমবে এবং নিয়োগদাতাদের বিদেশি স্নাতক নিয়োগে দ্বিধা দেখা দিতে পারে।
ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস ইনফোর্সমেন্ট (ICE) এবং Student and Exchange Visitor Program (SEVP) ইতিমধ্যেই হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে। কর্মসংস্থান সংক্রান্ত অনিয়মের কারণে কিছু শিক্ষার্থীর SEVIS রেকর্ড বাতিলের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত অনিশ্চয়
বর্তমান পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা শেষ করার পর ক্যারিয়ার গড়ে তোলা এখন স্পষ্টতই কঠিন। H-1B ভিসার খরচ বৃদ্ধি, OPT-এ কর আরোপের সম্ভাবনা, হঠাৎ সাইট ভিজিট এবং কঠোর আইন প্রয়োগ — এসব মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের চাকরির সুযোগ সীমিত হচ্ছে। ফলে, উচ্চ টিউশন ফি দিয়ে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীরা কম বেতন, নিয়োগদাতার কঠিন স্পনসরশিপ এবং বৈধ স্ট্যাটাস হারানোর ঝুঁকিয়ের মুখে পড়ছেন।











