বিশ্বজুড়ে খবর, এক ক্লিকেই

October 30, 2025 1:35 am
October 30, 2025 1:35 am

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য দীর্ঘ সময় না খাওয়ার প্রভাব

ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যেখানে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই ওজন কমানোর বা অন্যান্য কারণে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার চেষ্টা করেন। তবে ডায়াবেটিস রোগীর জন্য এটি কতটা নিরাপদ, তা নিয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

দীর্ঘ সময় না খেলে যা ঘটে

  • ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে শর্করার মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে ওঠানামা করতে পারে। এর ফলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া (রক্তে শর্করা হঠাৎ কমে যাওয়া) বা হাইপারগ্লাইসেমিয়া (রক্তে শর্করা হঠাৎ বেড়ে যাওয়া) হতে পারে।
  • আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের মতে, দীর্ঘ সময় না খাওয়া শরীরে ইনসুলিন ও ওষুধের প্রভাবকে জটিল করে এবং গুরুতর শর্করা-সংকট সৃষ্টি করতে পারে, যা প্রাণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
  • ২০১৯ সালের জার্নাল অব ক্লিনিকাল এন্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজমের একটি গবেষণা বলছে, দীর্ঘ সময় না খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি বেড়ে যেতে পারে

কেন রক্তে শর্করা বেড়ে যায়

  • দীর্ঘ সময় খাওয়া না হলে শরীর স্ট্রেস হরমোন যেমন কর্টিসল ও গ্লুকাগন নিঃসরণ করে।
  • এগুলো লিভারকে সংকেত দেয় জমে থাকা গ্লাইকোজেন ভেঙে রক্তে ছাড়তে
  • টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ইনসুলিন সঠিকভাবে কাজ না করায় শরীর অতিরিক্ত গ্লুকোজ ব্যবহার করতে পারে না। ফলে রক্তে শর্করা আরও বেড়ে যায়।

ছোট ছোট ভাগে খাবারের গুরুত্ব

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মূল উপায় হলো নিয়মিত ও সুষম খাবার। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, দিনে তিনবেলার বড় খাবারের পরিবর্তে ৪-৬ বার অল্প অল্প করে খাওয়া ভালো। ২০২০ সালের জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন-এর গবেষণায় দেখা গেছে, এই অভ্যাস রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং কি করা যাবে?

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং বর্তমানে জনপ্রিয় হলেও ডায়াবেটিস রোগীর জন্য এটি করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ অপরিহার্য। কারও জন্য সাময়িক ফাস্টিং রক্তে শর্করা কমাতে সাহায্য করতে পারে, আবার অন্যদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের স্টাডি অনুযায়ী, ফাস্টিং-এর আগে ওষুধ, ইনসুলিন এবং ডায়েট চার্ট অনুযায়ী পরিকল্পনা করতে হবে।

উপসংহার:
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য দীর্ঘ সময় না খাওয়া নিরাপদ নয়। বরং নিয়মিত সময়ে অল্প অল্প করে খাওয়াই সবচেয়ে কার্যকর। নতুন কোনো ডায়েট শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *