প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বুধবার আপিল বিভাগের দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে প্রশ্ন তোলেন, যদি সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তিত হয়, তবে তা সংসদের কার্যক্ষমতাকে প্রভাবিত করবে কি না।
এদিন বদিউল মজুমদারের আইনজীবী আপিল বিভাগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃস্থাপন চেয়ে আবেদন করেন এবং ১৪তম জাতীয় নির্বাচনের আগে এটি কার্যকর করার দাবি জানান। শুনানিতে জানানো হয়, হাইকোর্ট থেকে আপিল বিভাগ পর্যন্ত মোট ১২ জন বিচারপতি এই মামলাটি দেখেছেন। এর মধ্যে আটজন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে মত দিয়েছেন, আবার চারজন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকসহ বিপক্ষে মত দিয়েছেন।
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী প্রশ্ন তোলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাস্তবায়ন করা যৌক্তিক হবে কি না। পরে আইনজীবী শরীফ ভুঁইয়া বলেন, আপিল বিভাগ বিষয়টি নিয়ে একটি গাইডলাইন জারি করতে পারে। শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন, তত্ত্বাবধায়ক মামলার আপিল শুরুর আগে অন্য কোনো মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে না।
প্রসঙ্গত, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রথম সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয় ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। ১৯৯৮ সালে এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। ২০০৪ সালে হাইকোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে বৈধ ঘোষণা করেন, তবে ২০১১ সালে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। এরপর পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলোপ করা হয়।
বর্তমান সরকার পরিবর্তনের পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন দায়ের করেন সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। পরে ১৬ অক্টোবর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও আপিল বিভাগের কাছে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।
এই মামলাটি বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মামলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।











